Homeসঙ্গে রুকস্যকপাহাড়ে ঘেরা দীঘা

পাহাড়ে ঘেরা দীঘা

পাহাড়ে ঘেরা দীঘা
পার্থ দে


তো আরেকটা দীঘা পাওয়া গেল! না, দীঘা আরও বেশ কয়েকটা আছে বাংলা এবং বাংলার বাইরে। আমি বেড়াতে যাওয়ার দীঘার কথা বলছি। হরিনীর দিঘল চোখের মত এই দীঘা। যদি পাখির চোখে আকাশচারী হয়ে এই দীঘাকে দেখা যায় তবে মনে হবেই পাহাড় ঘেরা এই দীঘা একটা মস্ত সবুজ দীঘি হয়ে ছড়িয়ে রয়েছে প্রান্ত জুড়ে। আর ঠিক তখুনি যদি একটু জোরালো বাতাস দেয় তখন মনে হবে বড় বড় সবুজ ঢেউ ভাঙছে আমাদের এই দীঘা। এ এক নতুন দীঘা! এখানে নীল জলের বদলে শুধুই সবুজ আর সবুজ। না, এবার আকাশ থেকে মাটিতে নেমে আসা যাক….

দিনের পর দিন যখন কাজের একঘেয়েমি আমাকে গিলে খায়, মনটা খাঁচায় বন্দী পাখির মত ছটফট করে। তখন চটজলদি একটা ছুটির দিন দেখে বেরিয়ে পড়ি। নাগরিক কোলাহল থেকে অনেক দূরে চলে যেতে হবে। যেখানে ফোনের নেটওয়ার্ক থাকবে না। কেউ বিরক্ত করবে না। যেখানে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামবে বর্ষায়। পাহাড়-অরণ্য-নদী-ঝর্ণারা প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে। খুঁজে খুঁজে হদিস মিলল ঠিক এরকমই একটি জায়গার। নাম তার ঘাটশিলা। যার আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতি।

ঘাটশিলা স্টেশন থেকে অটোতে সওয়ার হয়ে ২০ কিমি দূরে পাড়ি। গন্তব্য ছোট্ট একটা পাহাড় ঘেরা গ্রাম, নাম দীঘা। অবাক হলেন? ভাবছেন ঘাটশিলাতে দীঘা এল কি করে? একদম ঠিক লিখেছি। পাহাড়ের ঠিক ওপারে বুরুডি ড্যাম। স্টেশন-বাজার এলাকার ঘিঞ্জিভাব ছাড়িয়ে চলেছি গ্রাম্য পথে। রাস্তায় পর পর অলস মন্থর গতির গরুর গাড়ি সব। কিছুটা যেতেই মিলিটারি ক্যাম্প। সেসব পার হতেই সম্পূর্ণ চরাচর বদলে গেল। কার তুলিতে আঁকা হয়েছে এমন মায়াবী ছবি? কী মোহময় রূপ প্রকৃতির ! রাস্তার দুদিকে বৃষ্টিভেজা মহুয়া ও আকাশমনির জঙ্গল। বসন্তকালে মহুয়ার ফুল মুক্তোদানার ছড়িয়ে থাকে গাছের নিচে।

জঙ্গল শেষ হল যেখানে, সামনে দিগন্ত জুড়ে দলমা পাহাড়ের রেঞ্জ। রাস্তার পাশে সবুজ ধানক্ষেত, আর দূরে সবুজ পাহাড় মিলেমিশে একাকার। মাইলপোস্ট দেখে বোঝা গেল, দীঘা গ্রাম আর বেশি দূর নয়। গ্রামের শুরুতেই আদিবাসী সহ সব ধরনের মানুষের বাস। এখানকার মানুষের জীবনযাত্রা কিছুটা উন্নত। ঘরবাড়ির দেওয়াল মাটি আর ইট দুয়েরই। মাথায় খড়, টালি বা টিনের ছাউনি দেওয়া। মন কেড়ে নেয় বাড়িগুলির দেওয়াল। কী মমতায় সুন্দর করে রঙ্গীন ছবি এঁকে সাজানো। বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের ব্যবস্থা আছে। প্রতি ঘরেই পাতকূয়া আর ঢেঁকি। তার সাথে হাঁস, মুরগী, ছাগল, ভেড়া, দুধের গাই আর গাড়ি বা লাঙ্গল টানার জন্য বলদ রয়েছে সবারই। তবে মোবাইল নেটওয়ার্ক খুবই ক্ষীণ।

গ্রামের শেষ প্রান্তে “আরণ্যক রিসর্ট”। অরণ্য আচ্ছাদিত ছোট ছোট পাহাড়গুলি আপন হয়ে তিনদিক থেকে ঘিরে রয়েছে একে। নানাধরনের ফুল আর ফলের গাছ, সবুজ ঘাসের কার্পেট, বসার বেঞ্চ, দোলনা, সাজানো গরুর গাড়ি আরো কত কিছু দিয়ে সাজানো রিসর্টের বাগান। এমন বাদল দিনে রিসর্টের বাগানে প্রিয় মানুষটির পাশে বসে, গরম গরম পকোড়া আর কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে গল্প চলতেই থাকবে। আপনি যদি আগে উত্তরবঙ্গ ঘুরে আসেন, তাহলে এখানকার বর্ষার মাদকতা উত্তরবঙ্গকে মনে করিয়ে দেবে আপনাকে। প্রকৃতি এখানে আপন খেয়ালে সবুজের পসরা সাজিয়ে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। চোখের শান্তি, মনের আরাম আর বুকভরা অক্সিজেন পাওয়া যাবে এখানে। প্রবাসী বাঙালী ও প্রকৃতিপ্রেমী মুখার্জীবাবু এখানে প্রথম একটি বাগানবাড়ি করেছিলেন। পরে ভাবলেন, এখানে যদি ট্যুরিস্টদের থাকার ব্যবস্থা করা যায় তাহলে তার বাগান পরিচর্যার খরচ উঠে আসবে। সেইমতো মাত্র সাতখানা ঘর নিয়ে এই রিসর্ট গড়ে তুলেছেন। নতুন ঘর বানানোর কথা বলতে তিনি জানান, এই বাগানটাই তার প্রাণ। এখানে কংক্রীটের দেওয়াল তুলে প্রকৃতির শোভা নষ্ট করতে চান না। খুশি হয়ে ধন্যবাদ জানালাম। তিনি আরো জানালেন, সকালে বাগানে বসে বাইনোকুলার নিয়ে দূরের পাহাড়ের দিকে লক্ষ্য রাখলে ময়ূরের দেখা পাওয়া যায়। সকালে সেই কর্কশ ডাক শুনেছিলাম, কিন্ত বাইনোকুলার ছিল না।

“মন মোর মেঘের সঙ্গী,
উড়ে চলে দিগ্‌দিগন্তের পানে
নিঃসীম শূন্যে শ্রাবণবর্ষণসঙ্গীতে
রিমিঝিম রিমিঝিম রিমিঝিম॥”

এমনই আর এক বর্ষার দিনে, আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে গিয়েছিলাম ঘাটশিলা। তখন বুরুডি ড্যামের পাড়ে দাঁড়িয়ে আছি। ঘণ ঘোর কালো মেঘে ছেয়ে গেল আকাশটা। এই বুঝি নটরাজের প্রলয় নৃত্য শুরু হবে। ভরা বিকেলে নেমে আসে সন্ধ্যার আঁধার। তড়িঘড়ি রাস্তার ধারের দোকাটপাট গুছিয়ে ফেলে দোকানদারেরা। পর্যটকেরা ফিরে যায় হোটেলে। থেকে গেছি শুধু আমরা, আর দু-একজন দোকানদার। আর ছিলাম বলেই এত কাছ থেকে মৌসুমী প্রকৃতির এক অনন্য রূপ উপভোগ করেছিলাম। কেমন একটা নিস্তব্ধ পরিবেশ, যাকে বলে Pin drop silence. কিছুক্ষণ পরেই আকাশের বুক চিরে বিদ্যুতের ঝলকানি আর প্রচন্ড শব্দে বাজ পড়া শুরু হল। আমরা তখন একটা টিনের ছাউনির নিচে দাঁড়িয়ে। ড্যামের ওপারে পাহাড়ের গায়ে জমে থাকা মেঘ ঝরে পড়ছে বৃষ্টি হয়ে। ধীরে ধীরে সেই মেঘ ক্রমশঃ ধেয়ে আসছে এপারে। ঠান্ডা বাতাস আর বাজ পড়ার শব্দে শরীর-মনে শিহরণ জাগে। শুরু হল প্রবল বৃষ্টি। ছাউনির নিচে থাকলেও জলের ঝাপটায় কিছুটা ভিজে গেলাম। ভাবছিলাম, এককাপ চা বা কফি থাকলে আড্ডাটা জমে যেত। কিন্ত ঐ মুহুর্তে কিছুই ছিল না। পাহাড়ে বৃষ্টি দেখা সত্যি একটা আলাদা অনুভূতি। যদিও সে অর্থে এখানে খুব উঁচু পাহাড় নেই, তবে ছোট ছোট পাহাড়গুলি চারদিকে ঘিরে একটা সবুজ উপত্যকার সৃষ্টি করেছে। এই উপত্যকার প্রাণকেন্দ্র বুরুডি ড্যাম। পাহাড়ী ঝোরার জলকে ধরে রেখে সেচের কাজে লাগানো হয়। ড্যামের স্বচ্ছ জলে দলমা পাহাড়ের প্রতিচ্ছবি ভাসে। বোটিং করা যায় ড্যামের জলে।

ছোটবেলায় ভূগোল বইতে পড়েছিলাম, জলীয় বাষ্পপূর্ণ মেঘ ভেসে এসে পাহাড়-পর্বতের গায়ে যেদিকে প্রতিহত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়, সেই দিককে ‘প্রতিবাত ঢাল’ বলে। প্রতিবাত ঢালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। আর এই প্রতিবাত ঢালের বিপরীত দিককে বলা হয় ‘অনুবাত ঢাল’। প্রতিবাত ঢালে বৃষ্টিপাত ঘটানোর পর. মেঘে আর জলীয়বাষ্প থাকে না। জলীয়বাষ্পহীন সেই শুকনো মেঘ পাহাড় ডিঙিয়ে, ওপারের অনুবাত ঢালে পৌঁছলে, সেখানে আর বৃষ্টিপাত হয় না বা হলেও খুব কম হয়। প্রতিবাত আর অনুবাত ঢালের বড় উদাহরন ছিল চেরাপুঞ্জি ও শিলং। এবার স্বচক্ষে দেখলাম, ঘাটশিলার প্রতিবাত ঢাল বুরুডি ড্যাম, আর অনুবাত ঢাল হল দীঘা গ্রাম। বুরুডিতে প্রবল বৃষ্টির পর, দীঘা গিয়ে দেখলাম, সত্যিই বৃষ্টি তেমন একটা হয় নি।

“এমন দিনে তারে বলা যায়
এমন ঘণঘোর বরিষায়।
এমন দিনে মন খোলা যায়–
এমন মেঘস্বরে বাদল ঝরঝরে
তপনহীন ঘণ তমশায়।”

বুরুডি ড্যামকে পাশ কাটিয়ে সবুজ পাহাড়ের পাকদন্ডী। সেটা পার হয়ে ৬ কিমি দূরে বাসাদেরা গ্রামে। আগে একবার ঘুরে গিয়েছি এখানে। তখন থেকেই থেকেই মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলাম, এপথে একবার বাইক সফর করব। দার্জিলিং বা সিকিম যেতে না পারার ইচ্ছেটা এইভাবে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটালাম। বাইক আরোহীদের জন্য এই পথে যথেস্ট রোমাঞ্চ মজুত আছে। পাহাড়ে শাল-শিমুল-পলাশ-কেন্দু-মহুয়ার গভীর জঙ্গল। এক গ্রামবাসী জানালেন, মহুয়ার টানে আগে নাকি জঙ্গল থেকে ভালুক বেরিয়ে আসত। বসন্তকালে প্রতি বাড়িতে মহুয়া তৈরী হয়। এখান থেকে টাটকা মহুয়ার স্বাদ নিতেই পারেন। দেখেও নেবেন, ঘরোয়া পদ্ধতিতে কীভাবে মহুয়া প্রস্তুত হয়। গ্রামবাসীদের মধ্যে দারিদ্রের প্রকট ছাপ। একটি স্কুল আছে গ্রামে। কিন্তু থাকলে কী হবে? বেশিরভাগ ছেলে মেয়েরাই পড়াশুনা করে না। গ্রামেই রমেন মান্নার ছোট্ট একটি মুদি দোকান। সেখানেই আমাদের বাইক পার্কিং করতে হল।

রমেনদার সাথে আলাপ হয়েছিল গতবারে। রমেনদাকে চা আর ডিমসেদ্ধ রেডি করতে বলে, চললাম ধারাগিরি ফলস্ দেখতে। প্রায় দু’কিমি হেঁটে জঙ্গলের মধ্যে ঐ ঝর্ণা। সাধারনতঃ স্থানীয় বাচ্চা ছেলেরা কিছু পয়সার বিনিময়ে পথ দেখিয়ে নিয়ে যায়। সেদিন কেউ ছিল না, আমাদের নিজেদেরই হাঁটতে হবে। কিছুটা এগোলেই বিশাল একটা ফাঁকা মাঠ আর তার চারপাশে সারিসারি পাহাড়। যার প্যানরোমিক ভিউ এককথায় অসাধারণ। মনে ভাবলাম, আহা এমন একটা যায়গায় যদি চাঁদনী রাতে তাঁবু খাটিয়ে থাকা যেত! তবে সে আশা না করাই ভালো। কারণ, যখন তখন গজরাজের আবির্ভাব ঘটে এখানে। মাঠের একটা অংশে এক ব্যক্তি লাঙ্গল চালিয়ে হাল করছিলেন। বলদ দুটি আমাদের অচেনা মুখ দেখে ভয় পেয়ে গেল। মাঠ পেরিয়ে জঙ্গলে প্রবেশ। গতবারে একটা কর্কশ ডাক কানে এসেছিল। সঙ্গের বাচ্চা ছেলেটি বলেছিল, ওটা ময়ূরের ডাক। খুব সকালে এলে দেখাও যায়। জঙ্গলের মধ্যে গাছের ডালপালা দিয়ে বানানো একটা ছোট্ট সেতু পেরিয়ে এগিয়ে চলা। কিছু দূরে নুড়িপাথরে ভরা প্রাণহীন এক নদী। বর্ষায় নাকি এই নদীতেই হড়কা বান আসে। আরো একটু যেতেই চোখে পড়ল ধারাগিরি ফলস্। উচ্চতা মাত্র ২০ফুট। বর্ষা ছাড়া অন্য সময় জল থাকে না। আসলে এটিকে ঝর্ণা বা জলপ্রপাত না বলে, পাহাড়ী ঝোরা বলাই ভালো।

এই পাহাড়ী ঝোরা দেখে মন না ভরলেও, ২ কিমি জঙ্গল ট্রেক, আপনার মন ভরিয়ে দেবে গ্যারান্টি দিতে পারি। ফিরে এসে রমেনদার দোকানে চা, বিস্কুট ও ডিমসেদ্ধ দিয়ে পেটপূজো সারা হল। প্রায় ১৫ কিমি দূরে ঘাটশিলার বাজার থেকে রমেনদা দোকানের মালপত্র কিনে আনেন। অবাক হলাম, জিনিসের যা ন্যাহ্য দাম, তার থেকে এক টাকাও বেশি নেননি আমাদের কাছে। যেমন– চা ৫ টাকা, বিস্কুটের প্যাকেট ১০ টাকা ও ডিম সেদ্ধ ১০ টাকা। কোথাও কিন্তু লেখা ছিল না “সততাই ব্যবসার মূলধন”।
ঘাটশিলাতে আমার ভালোলাগার কিছু মুহুর্ত তুলে ধরলাম। আশাকরি, বেড়াতে গেলে আপনাদেরও ভালো লাগবে।

★ কিভাবে যাবেন :-

হাওড়া থেকে সকালের জনশতাব্দী এক্সপ্রেস অথবা ইস্পাত এক্সপ্রেসে চড়ে ১০টার মধ্যে ঘাটশিলা। স্টেশন থেকে হোটেলে পৌঁছাতে বা সাইটসিয়িং ঘুরতে অটো ভাড়ার জন্য টিঙ্কুদাকে আগে থেকে ফোন (9234773225 / 9113138640) করতে পারেন।

★ কি কি দেখবেন :-

স্টেশনের আশেপাশে — সূবর্ণরেখা নদীর ভিউ পয়েন্ট বা পিকনিক স্পট, রাজবাড়ি (ভেতরে প্রবেশ নিষেধ), চিত্রকুট পাহাড়ে শিব মন্দির, গৌরী কুঞ্জ (সাহিত্যিক বিভূতিভূষণবাবুর বাড়ি), রঙ্কিণীদেবীর মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন, হাইওয়ের পাশে ফুলডুংরী টিলা (শোনা যায় এখানেই বসে নাকি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় চাঁদের পাহাড় উপন্যাস রচনা করেছিলেন)। এখানে ফাল্গুনী পূর্ণিমাতে আদিবাসী উৎসব হয়।

ঘাটশিলা থেকে ১২ কিমি দূরে গালুডি ব্যারেজ, ব্যারেজ পেরিয়ে কিছু দূরে সিদ্ধেশ্বর পাহাড়ে শিবের মন্দির, রঙ্কিনী দেবীর মন্দির (যাদুগোড়া), ফেরা পথে গালুডি মোড়ের কাছে পাট মহুলিয়াতে রঙ্কিণী পাহাড়ে দূর্গা মন্দির, এছাড়া এখান থেকে ঘুরে আসতে পারেন ১৫ কিমি দূরে পুরুলিয়ার দুয়ারসিনি। দেখবেন সাতগুরুম নদী, শনিবারের আদিবাসী হাট, দুয়ারসিনি মাতার মন্দির, বসন্তকালে পলাশের দেখা পাবেন। নতুন বনবাংলো তৈরী হলেও বুকিং শুরু হয় নি। বুরুডি ড্যাম ও ধারাগিরি ফলস্, হিন্দুস্থান কপার সংলগ্ন নদীর ধারে ঘাটশিলা ফলস্ এবং ‘রাতমোহনা’ থেকে অথবা রাজবাড়ির পেছনে নদীর ধারে মা সন্তোষী হোটেলের কাছ থেকে সূর্যাস্ত ভালো দেখা যায়।

★ কোথায় থাকবেন :-

★ রিসর্ট আরণ্যক (7362888864/736288864) – দীঘা গ্রামে থাকার একমাত্র হোটেল
★ রামকৃষ্ণ মিশন (06585 225110/227144) – লালডিহি লেভেল ক্রসিং এর সামনে।
★ সুহাসিতা রিসর্ট (9771831877/9431542967) – ঘাটশিলা স্টেশনের কাছে কাশিদা এলাকায়।
★ J.N. Palace (8757361480) – হাইওয়ের পাশে ফুলডুংরী টিলার কাছে স্টার ক্যাটগরির হোটেল।
★ হোটেল জয়গুরু (9835176929) – লালডিহি লেভেল ক্রসিং এর ওপারে।
★ জয় মা সন্তোষী (9570210088) – রাজবাড়ির পেছনে নদীর ধারে।
★ হোটেল আকাশদীপ (ঘাটশিলা স্টেশনের কাছে) / শাখা – হোটেল রিভার ভিউ (9431543968)- নদীর ধারে
★ JTDC বিভূতি বিহার (9693998636) – হাইওয়ের পাশে। স্টেশন থেকে অনেকটা দূরে। চারপাশ ফাঁকা।
পিছনে পাহাড়। Location খুব ভালো। Online Booking 
★ গালু়ডি রিসর্ট – গালু়ডি বাসস্টপের (NH-33)কাছে (9199868541 / 9570200268)
★ K.D. Palace এবং বনবীথি (9830674328) – গালুডি স্টেশনের কাছে।

 

★★ কিছু কথা :-

★ ভরা গ্রীষ্মকাল ছাড়া যেকোন সময়ে ঘাটশিলা যেতে পারেন। আমার পছন্দ বর্ষা ও বসন্তকাল।
★ আরণ্যক রিসর্টের নিজস্ব রেস্টুরেন্ট আছে। ইন্ডিয়ান ও চাইনিস খাবার পাবেন। তবে দামটা বেশ চড়া।
★ কিছু হোটেলের নিজস্ব খাওয়া ব্যবস্থা নেই। তাই বুকিং করার আগে খাওয়া, পার্কিং, জেনারেটর ইত্যাদি কি কি ব্যবস্থা আছে, ফোন করে জেনে নেবেন।
★ লালডিহি লেভেল ক্রসিং এর কাছে গণেশের কালাকাঁদ অবশ্যই খেয়ে দেখবেন।
★ কোনো কোনো রিসর্ট থেকে আলাদা চার্যে আদিবাসী নৃত্য, গরুর গাড়ি, বন ফায়ার ইত্যাদির ব্যবস্থা করে দেয়।
★ আমার ট্যুর প্ল্যান অনুযায়ী, সব ঘুরতে পুরো দুদিন লাগবে। প্রথম দিন কাছের স্পটগুলো আর দ্বিতীয় দিন দূরের স্পটগুলো দেখে নেবেন।
★ আদিবাসী গ্রামে গেলে মানষজনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার করবেন। অকারনে বা কারোর আপত্তি থাকলে ফটো তুলবেন না। বাসাদেরা ও দীঘা গ্রামে অনেক ছোট ছোট ছেলেমেয়ে আছে। সম্ভব হলে ওদের জন্যে কিছু বিস্কুট, চকোলেট, খাতা, পেন, পোশাক ইত্যাদি নিয়ে যেতে পারেন।
★ দলে বয়স্ক কেউ থাকলে বা কারো পায়ের সমস্যা থাকলে টিলাগুলিতে উঠতে সমস্যা হতে পারে।
★ Mosquito Repellent Cream বা Roll on এবং প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র (First Aid) সঙ্গে রাখবেন।
★ শেষে একটাই অনুরোধ, যেখানেই যান না কেন আবর্জনা ফেলে আসবেন না। পরিবেশের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখবেন।

RELATED ARTICLES

Most Popular