Homeসঙ্গে রুকস্যকসাত ঘাট পেরিয়ে 'জি' প্লটের জলে জঙ্গলে ।। পার্থ দে

সাত ঘাট পেরিয়ে ‘জি’ প্লটের জলে জঙ্গলে ।। পার্থ দে

সাত ঘাট পেরিয়ে ‘জি’ প্লটের জঙ্গলে

পার্থ দে :এক কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে আমরা চারমূর্তি শিয়ালদহ থেকে নামখানা লোকালে যাত্রা শুরু করেছি। তখন থেকেই মনের মধ্যে একটা চাপা উত্তেজনা অনুভব করছিলাম। কারণ, আমাদের যাত্রাপথে একটি পাক্কা আড়াই ঘন্টার নৌকা সফর রয়েছে। টানা দেড়শো মিনিট জলের সাথে সহবাস। ভাবা যায়! কাকদ্বীপ থেকে বাসে করে পাথরপ্রতিমা পৌঁছালাম আমরা। পাথরপ্রতিমা ফেরীঘাট থেকে 10.15-র মিনি লঞ্চে চড়ে আমাদের জলযাত্রা শুরু হল।

সত্যিই এক স্মরণীয় যাত্রা। সাঁতার না জানলেও আপনার মনে ভয় নয়, আনন্দ আসবে। সারাদিনে মাত্র 5/6 টি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে সুন্দরবন এলাকার বিভিন্ন দ্বীপে পৌঁছে দেয়। শুধু কি মানুষ! সেই সাথে সাইকেল, হাঁস, মুরগী, ধান-চাল, শাক-সবজী ও আরও নানান জিনিসপত্র দ্বীপের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যায়। এরকমই একটি দ্বীপেই আমরা যাচ্ছি।

মৃদঙ্গভাঙা নদীর পাথরপ্রতিমা ঘাট। সেখান থেকে লঞ্চ ছেড়ে, থামবে অপর পাড়ে রামগঙ্গা ঘাটে। তারপর আরো সাতটি ঘাট। কংক্রীটের জেটি আছে দু-একটি ঘাটে। বেশিরভাগ ঘাটে নদীর ভাঙনে জেটির কোন অস্তিত্ব নেই। মই বেয়ে, কখনও বা পাটাতনের ওপর দিয়ে ওঠানামা করতে হয়। আমরা লঞ্চের ডেকের (পড়ুন ছাদে) ওপর বসে ছিলাম। শীতের দিনে লঞ্চের ডেকের ওপর বসে রোদ পোহানো বেশ আমেজের। ধীরে ধীরে এক নদী থেকে অন্য নদীতে এসে পড়ল আমাদের সাম্পান। জলের রঙ স্বচ্ছ নীলাভ। নদীর দুপাশে ম্যানগ্রোভের জঙ্গল। জঙ্গলে আর নদীর ধারে ধারে নানান পাখির দেখা মেলে। তবে কপালে লেখা থাকলে, কুমীরের রোদ পোহানোর দৃশ্যও চোখে পড়ে যেতে পারে। তবে এ তল্লাটে বাঘ মামাকে পাবেন না। ভেসে চলেছি, চোখ রাখা আছে বাইনোকুলার আর ক্যামেরায়। তারই মাঝে টুকটাক খাওয়া-দাওয়া। বাদাম, চিপস, মশলা মুড়ি, পেয়ারা আরো কতকি। এইভাবে ভাসতে ভাসতে কখন যে দেড় ঘন্টা কেটে গেল, খেয়াল নেই। চলে এলাম জি-প্লট দ্বীপের চাঁদমারি ঘাটে।

সেদিন রবিবার ছিল। শেষ ঘাট সীতারামপুর পর্যন্ত লঞ্চ যাবে না। অগত্যা এখানেই নামতে হবে। চাঁদমারি ঘাট থেকে আমরা একটা ‘সুপারফাস্ট’ ইঞ্জিন ভ্যানে চড়ে বসলাম। মাত্র আধঘন্টায় পৌঁছে গেলাম আমাদের মূল গন্তব্যে। জি-প্লট দ্বীপের একেবারে সমুদ্র-ছোঁয়া জনপদ। গ্রামের নাম– গোবর্দ্ধনপুর।

আসলে আমাদের এই সফরের উদ্দেশ্য শুধুই ভ্রমণ নয়, এখানকার মানুষের জীবনযাত্রাকে পর্যবেক্ষণ বা উপলব্ধি করা। বুলবুল ঝড়ের পরবর্তী সময়ে সম্ভবত আমরাই প্রথম পর্যটক। আগে থেকে ফোন করে রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের অতিথি নিবাসে আমাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা ছিল। যদিও ঝড়ে আশ্রমের দোতলার ঘরগুলোর চাল উড়ে গিয়েছে। মেরামতির কাজ চলছে তখন। আশ্রমের ইন-চার্য সুধাংশুবাবু। খুবই মিশুকে আর অতিথিপরায়ণ মানুষ। আমাদের থাকার জন্য একতলার দুটি ঘর খুলে দিলেন। ছোট কিন্তু খুবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ঘরগুলি। দুটি তক্তাপোশের ওপর পরিষ্কার বিছানা পাতা। মশারী দুটোও নতুন। এটাচড বাথরুম। আশ্রমের জমিতে শাক সবজী ও পুকুরে মাছের চাষ হয়। বাইরের টিউবয়েলের জলে স্নান সেরে আশ্রমের ডাইনিং রুমে চলে এলাম। আমাদের লাঞ্চে ছিল ভাত, ডাল, শাকভাজা, বাঁধাকপির তরকারি আর মাছের ঝাল (পুকুরের মাছ)। সুধাংশুবাবুর স্ত্রীর হাতের সুস্বাদু ও ঘরোয়া রান্না চেটেপুটে খেলাম আমরা।

আশ্রম থেকেই পথ গিয়েছে সোজা সমুদ্রে। ইঁট বিছানো রাস্তা। চললাম দ্বীপের পশ্চিমতম প্রান্তে। সেখানেই Sunset Point. গত দুবছর ধরে এখানে সমুদ্রের ভাঙন আটকাতে কংক্রীটের বাঁধ দেওয়ার কাজ চলছে। সিমেন্টের চাতাল বানানো আছে। কেবল বসে পড়বার অপেক্ষা। প্রকৃতির অপরূপ রূপের মেলা এখানে। বসে বসে শুধু– দেখোরে নয়ন মেলে।
দূরে এক কলঙ্করেখা দেখা যাচ্ছে– বকখালি দ্বীপের ভূখন্ড ওটি। এই সৈকত খুবই শান্ত ও মায়াবী। এরকম নির্জন স্থানে প্রকৃতিকে এত কাছ থেকে পাবার জন্যই তো এখানে ছুটে আসা। সামান্য দূরে সাদা বালির সৈকত আর লাল কাঁকড়াদের অবিরাম লুকোচুরি খেলা। সারা বিকেলটা সৈকতের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে হেঁটে বেড়ালাম। দিনের শেষে সেরা প্রাপ্তি অসাধারণ এক সূর্যাস্তের সাক্ষী থাকা। সূর্যাস্তের রক্তিম আভা ছড়িয়ে পড়ল সারা সৈকত জুড়ে। এ এক অনন্য অনুভূতি, ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। পাশের ম্যানগ্রোভ জঙ্গলে পাখিদের সমবেত কলতান বড়ই মধুর শোনাচ্ছিল।

সূর্যদেব অস্ত গিয়েছেন। আকাশটা তখনও সিদুঁর-রাঙা লাল। দু’দিকে ঝাউ আর আকাশমনি গাছের আকাশছোঁয়া পাঁচিল। তার ভিতর দিয়ে ইঁট পাতা রাস্তা ধরে হেঁটে চললাম গ্রামের ভেতরে। দেখি একটা গাছে অনেক শামুকখোল পাখি তাদের সংসার পেতেছে। আমাদেরকে দেখে তারা বড়ই বিব্রত হল। আমরাও তাই আর বিরক্ত করলাম না তাদের। হাতের ক্যামেরা হাতেই ধরা রইল। ছবি না তুলেই এগিয়ে গেলাম। হাঁটতে হাঁটতে সখের বাজারে চলে এলাম। কিছু মুদি ও সবজীর দোকান আছে এখানে। একটা দোকানে লিকার চা ও হিংচের চপ খাওয়া চলছে। এমন সময় সুধাংশুবাবুর ফোন, তাড়াতাড়ি আশ্রমে চলে এস, টিফিন খাবে।

আশ্রমে গিয়ে দেখি বেগুনী আর পাঁপড় ভাজা হচ্ছে। আমাদের স্টকে শসা, চানাচুর, ভেজানো ছোলা এবং পেঁয়াজ ছিল। পাথরপ্রতিমা ঘাট থেকে এসব কিনেছিলাম। এইসব কিছু দিয়ে দূর্দান্ত একটা মুড়ি মিক্সার তৈরি হয়ে গেল। সবাই মিলে হামলে পড়লাম। কথায় কথায় সুধাংশুবাবু জানালেন, সন্ধ্যের পর বা ভোরবেলায় যখন খুশি সমুদ্রের ধারে যাও, কোন ভয় নেই। কেউ জিজ্ঞাসা করলে, বলবে আশ্রমের গেস্ট।

দু’বছর আগে দ্বীপে ইলেকট্রিসিটি এসেছে। জ্বলজ্বল করছে বুলবুলের তান্ডবের ছবি। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে আছে এখানে ওখানে। কয়েকদিন আগে আশ্রম লাগোয়া এলাকার লাইন মেরামত হয়েছে। তবে, ভোল্টেজের তেমন উন্নতি হয়নি। ল্যাম্পপোস্টের আলো জ্বলছে, কিন্তু ভারী টিমটিমে। আমরা সেই আলো আঁধারি পথ ধরে আবারও চললাম সমুদ্রের ধারে।
ক’দিন পরেই পূর্ণিমা। জ্যোৎস্না ছড়িয়ে আছে চারিদিকে। এখন সমুদ্র বিকেলের মতো শান্ত নয়। মাঝেমাঝে দু’একটা বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে কংক্রিটের বাঁধে। দূর সমুদ্রে মৎসজীবিদের ট্রলারের আলোগুলো মিটমিট করে জ্বলছে। আমরা প্রায় আড়াই ঘণ্টা সমুদ্রাচ্ছন্ন হয়ে বসে আছি। সুধাংশু বাবুর ফোনে সম্বিৎ ফেরে। বললেন, ডিনার রেডি। আশ্রমে ফিরে গিয়ে সামুদ্রিক মাছের ঝোল দিয়ে ভাত খেলাম। তারপর আগামীকালের ঘোরাঘুরির নকশা তৈরি করে, ঘুমের দেশে পাড়ি দিলাম।

ভোর পাঁচটা বাজতে না বাজতেই ঘুম থেকে উঠে, চললাম সূর্যোদয় দেখতে। এই দ্বীপের এটাই বিশেষত্ব। এর এক প্রান্ত থেকে সূর্যোদয় আর অন্য প্রান্ত থেকে সূর্যাস্ত দেখা যায়। তবে কেন জানি না, আজ আকাশের মুখ ভার। মেঘের জন্য সূর্যোদয়ের ছবি তুলতে সমস্যা হল। তবুও যা দেখেছি, সেটাই বা কম কিসের। লুকোচুরি খেলা শেষ হল এক সময়। মেঘের আস্তরন সরিয়ে কিছু পরে সূর্যদেব ধরা দিলেন। খাতায় কলমে এটাই গোবর্দ্ধনপুর সি বীচ। পর্যটন দপ্তর বীচের ধারে আর ঝাউ বাগানের ভিতর শেড দেওয়া বসার বেঞ্চ বানিয়ে দিয়েছে।

ঝাউবনে আর সমুদ্রের ধারে বালিতে বেশ কিছু পাখি দেখলাম। কিছু ক্ষুদে ফুটবলারদের প্র্যাকটিস চলছে বিচের বালিতে। বড়দিন আর ইংরেজি নববর্ষের সময় সেজে ওঠে সমুদ্র সৈকত। ২৩ ডিসেম্বর থেকে ২রা জানুয়ারী মেলা বসে। প্রায় ঘন্টা তিনেক ধরে পুরো গ্রামটা চষে ফেললাম। এখনও বুলবুলের ক্ষতচিহ্ন ছড়িয়ে আছে। লাইটপোস্ট, গাছ উপড়ে পড়ে আছে। কারও ঘর ভেঙেছে, কারও বা চালা উড়ে গিয়েছে ছাউনির। এখানে প্রকৃতির সঙ্গে কঠিন লড়াই মানুষের। শুধু টিকে থাকবার জন্য। সরকারি উদ্যোগে সি বীচে যাওয়ার পাকা রাস্তা হয়েছিল। ঢেউয়ের ছোবলে সব ভেঙে গিয়েছে। পর্যটকদের ব্যবহারের টয়লেট গড়ে দেওয়া হয়েছিল। গাছ পড়ে সেসব এখনও অবরুদ্ধ হয়ে আছে। বহু ঝাউগাছ ভূতলশায়ী। বাঁধ ভেঙে সমুদ্রের জল ঢুকেছে গ্রামে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা ত্রিপল ছাড়া আর কিছু পায় নি বলে আমাদের অভিযোগ জানালেন। অনেকে নিজের খরচে বাড়ি মেরামত করেছেন।

এখানকার বেশিরভাগ মানুষ মেদিনীপুরের আদি বাসিন্দা ছিলেন। বহু বছর আগে মেদিনীপুরের পূর্ব এলাকার নন্দীগ্রাম, খেজুরী, হলদিয়া, কাঁথি ইত্যাদি এলাকা থেকে এখানে এসে বসতি স্থাপন করেছেন। এখানকার মানুষজন টাটকা শাকসবজীর মতোই নির্ভেজাল। আমরাও পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা– একথা শুনে এক বয়স্ক মানুষ এগিয়ে এলেন। বেশ আবেগতাড়িত। শোনাতে লাগলেন তাঁর পুরানো দিনের কত কথা কত কাহিনী। এতদিন শুধু শুনেই এসেছি। আজ চোখের সামনে দেখলাম এই ছড়ানো ছিটানো বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলির মানুষজনের জীবনযাত্রা। উপলব্ধি করলাম, দু’মুঠো ভাতের জন্য তাদের বেঁচে থাকার কঠিন লড়াই। কেউ মৎসজীবি, ঝড়-ঝঞ্ঝাকে উপেক্ষা করে বেরিয়েছেন গভীর সমুদ্রে। কেউবা জঙ্গল থেকে মধু ও মোম সংগ্রহ করেন।ঝড়-জলের পাশাপাশি বাঘ-কুমীরের সাথে লুকোচুরি খেলতে খেলতে জীবন কাটে তাঁদের। গাঁয়ের কুঁড়েঘরটিতে রেখে আসা বৃদ্ধ বাবা-মা, পরিবার, সন্তানের কথা প্রতিনিয়ত ভাবতে হয় তাঁদের। কাছে ইন্দ্রপুরে একটি মাত্র প্রাথমিক হাসপাতাল আছে। কারো হঠাৎ করে বড় ধরনের কিছু হলে, তখন নিয়ে যেতে হবে কাকদ্বীপের বড় হাসপাতালে। সেক্ষেত্রে তিন-চার হাজার টাকায় নৌকা ভাড়া করে রোগীকে নিয়ে যেতে হয়। এলাকায় কোন ব্যাঙ্ক বা ATM নেই। কেবল-লাইন নেই। তবে কিছু বাড়িতে ডিস অ্যান্টেনা আছে। লোকেরা এখনও রেডিও-র খবর শোনে এখানে। দ্বীপে একটি মাত্র হাইস্কুল আছে। গোবর্দ্ধনপুর কোস্টাল থানা বসেছে ইন্দ্রপুরে। এরপর বাঘা যতীন ক্লাবের কাছে ট্রলার মেরামতির প্রক্রিয়া দেখে, ফিরে গেলাম আশ্রমে।

আজ একটু দেরীতেই ঘুগনি ও মুড়ি দিয়ে ব্রেকফাস্ট সারা হল। আমাদের এদিন বাড়ি ফিরতে হবে। সুধাংশুবাবু বললেন, সীতারামপুর থেকে দুপুর ১টায় লঞ্চ। তাই আমাদের দুপুরের খাবার সাড়ে ১১টার মধ্যে রেডি হয়ে যাবে। হাতে কিছুটা সময় ছিল। সমুদ্র স্নান না করলে তো ঠাকুর পাপ দেবে। তাই কিছুক্ষণ সমুদ্রে লাফালাফি করা হল। তারপর আশ্রমে গিয়ে কলের জলে স্নান করে ডাইনিং রুমে চলে গেলাম। ডিমের ঝোল দিয়ে ভাত খেয়ে ব্যাগপত্র গোছগাছ।

টোটোকে আগে থেকে বলা ছিল। সময়মতো চলে এল। সুধাংশুবাবুকে তার প্রাপ্য মিটিয়ে দিয়ে, ধন্যবাদ জানিয়ে রামকৃষ্ণ আশ্রম থেকে বিদায় নিলাম। মিনিট ২০ লাগল সীতারামপুর ঘাটে পৌঁছাতে। ঘাট বলে কিছু নেই, শুধুই স্মৃতি চিহ্ন। দুপুর ১টায় লঞ্চ এল। ১৫ মিনিট পর লঞ্চ ছাড়ল। ভেসে পড়লাম নীল সায়রের জলে। পাথরপ্রতিমা ঘাটে পৌছালাম বিকেল ৩.৪৫এ। বাড়ি ফিরলাম, তখন রাত ৯টা।

★★ কিভাবে যাবেন :-

◆ শিয়ালদহ থেকে নামখানা লোকালে কাকদ্বীপ(2ঘ.25মি) – স্টেশন থেকে টোটোতে কাকদ্বীপ বাসস্ট্যান্ড – বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে পাথরপ্রতিমা (1 ঘন্টা) – পাথরপ্রতিমা বাসস্ট্যান্ড থেকে টোটোতে জিপ্লট যাওয়ার ফেরীঘাট – সকাল 9টা বা সাড়ে 11 টার লঞ্চে দেড় ঘন্টায় চাঁদমারী ঘাট (ভাড়া-12 টাকা) অথবা 10.15 বা দুপুর 1 টার লঞ্চে আড়াই ঘন্টায় সীতারামপুর ঘাট (ভাড়া-19 টাকা)। চাঁদমারী ঘাট থেকে টোটোতে প্রায় এক ঘন্টায় 15 কিমি দূরে গোবর্দ্ধনপুর গ্রাম। ভাড়া 150-200 টাকা রিজার্ভ। আর সীতারামপুর ঘাট থেকে 20 মিনিটে 5 কিমি দূরে গোবর্দ্ধনপুর। ভাড়া 80-100 টাকা রিজার্ভ।

◆ শিয়ালদহ থেকে নামখানা/লক্ষ্মীকান্তপুর লোকালে লক্ষ্মীকান্তপুর স্টেশন – টোটোতে বাসস্ট্যান্ড – বাসে রামগঙ্গা (2 ঘন্টা) – ফেরীঘাট থেকে লঞ্চে চাঁদমারী বা সীতারামপুর ঘাট। মনে রাখবেন, পাথরপ্রতিমা আর রামগঙ্গা একই নদীর দুই পার। লঞ্চ পাথরপ্রতিমা ঘাট থেকে ছেড়ে রামগঙ্গা ঘাটে আসে। তাই আমার মতে পাথরপ্রতিমা থেকেই লঞ্চে উঠলে নিজের পছন্দমতো বসার যায়গা পাবেন। সীতারামপুর থেকে ফেরার লঞ্চ সকাল 06.30/07.30/দুপুর 1টা। চাঁদমারী থেকে ফেরার লঞ্চ দুপুর 2.30, বিকাল 04.30 ।

◆ শিয়ালদহ থেকে নামখানা লোকালে নামখানা – টোটোতে ফেরীঘাট – দিনের একমাত্র লঞ্চ দুপুর 2টায় – প্রায় আড়াই ঘন্টায় জিপ্লটের তটের বাজার ঘাট – টোটোতে 20 মিনিটে গোবর্দ্ধনপুর। ফেরার একমাত্র লঞ্চ ভোর 5টায়।

◆ ধর্মতলা থেকে ভূতল পরিবহনের বাসে সরাসরি পাথরপ্রতিমা/রামগঙ্গা/কাকদ্বীপ/নামখানা যেতে পারেন।

★★ কোথায় থাকবেন :-

◆ ঝাউমন হোমস্টে – 9732890908
◆ মাইতি ভবন হোমস্টে – 8145944494
◆ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম (9733679052)

সবগুলিই সাধারন মানের হোমস্টে। বেশি কিছু আশা করবেন না।

★★ মনে রাখবেন :-

◆ এটা কোন নামকরা ট্যুরিস্ট স্পট নয়, তাই দীঘা-পুরীর মতো সমুদ্র দেখতে যাচ্ছেন ভেবে গেলে নিরাশ হবেন। মনে করবেন একটা শুধু নতুন যায়গায় যাচ্ছেন। অজানাকে জানার কৌতূহল নিয়ে যাবেন। প্রান ভরে আনন্দ আর বুক ভরে বিশুদ্ধ অক্সিজেন নিয়ে ফিরবেন একথা গ্যারেন্টি দিয়ে বলতে পারি।
◆ নৌকা ভাড়া করে বনি ক্যাম্প ও কলস দ্বীপ ঘুরে আসতে পারেন।
◆ নদী বা সমুদ্র তটে আবর্জনা ফেলবেন না।
◆ সমুদ্রের গভীরে নামবেন না। এখানে পিকনিকের মরসুম ছাড়া কোনো পুলিশি নজরদারি বা নুলিয়া থাকে না। ফলে আপনার অসতর্কতায় বড় বিপদ হতে পারে।
◆ বীচের ওপর বা আশ্রমের মধ্যে মদ্যপান করবেন না। মদ্যপান করে সমুদ্রে নামবেন না।
◆ শুকনো খাবার ও জল সঙ্গে রাখবেন। আপনার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যাওয়ার পথে পাথরপ্রতিমা বা রামগঙ্গা বাজার থেকে সংগ্রহ করে নেবেন। গোবর্দ্ধনপুরে জল কিনতে পাওয়া যায়।
◆ ওডোমস ক্রীম বা মর্টিন কয়েল, পাওয়ার ব্যাঙ্ক, ক্যামেরার Extra ব্যাটারী, জুম লেন্স, বাইনোকুলার, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ইত্যাদি সঙ্গে রাখবেন।
◆ পাথরপ্রতিমা বা রামগঙ্গা বাজারে ATM আছে।
◆ জিপ্লটে ভোডা-এয়ারটেলের থেকে জিও-র নেট বেশি ভালো কাজ করে।
tour

 

RELATED ARTICLES

Most Popular