Homeএখন খবরমান রাখল দিব্যজ্যোতিই! পুরুলিয়ার জয়পুরে নির্দল প্রার্থীর হয়েই লড়ার সিদ্ধান্ত তৃণমূলের

মান রাখল দিব্যজ্যোতিই! পুরুলিয়ার জয়পুরে নির্দল প্রার্থীর হয়েই লড়ার সিদ্ধান্ত তৃণমূলের

অশ্লেষা চৌধুরী: শেষ অবধি দলত্যাগী নির্দল প্রার্থীর হয়েই ভোটে লড়তে চলেছে তৃণমূল। বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধীদের ফাঁকা গোল দেওয়ার সুযোগ দিতে একেবারেই প্রস্তুত নয় শাসক শিবির, তাই যে দিব্যজ্যোতিকে আগে ভরসা করতে পারেনি, শেষে তারই শরনাপন্ন হল শাসক শিবির।

প্রসঙ্গত, ৫ই মার্চ তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একের পর এক অসন্তোষের খবর প্রকাশ্যে আসতে থাকে রাজ্যের একাধিক প্রান্ত থেকে, বাদ যায়নি পুরুলিয়ার জয়পুর কেন্দ্রও। জয়পুর ব্লকের তৃণমুলের যুব সভাপতি দিব্যজ্যোতি সিং দেও আশায় বুক বেঁধে থাকলেও দেখা যায় প্রার্থী তালিকায় তার নাম নেই। তার জায়গায় জয়পুর বিধানসভায় শাসক দল প্রার্থী হিসাবে উজ্জল কুমারের নাম ঘোষণা করেছে। আর টিকিট না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে দল ছেড়ে দেন দিব্যজ্যোতি এবং তিনি নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়বেন বলেও সিদ্ধান্ত নেন। জয়পুর রাজশ্রী রাজ পরিবারে এক সভায় তিনি তাঁর সমর্থকদের জানান, দিদির অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু, তার ফলাফল, তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়নি। তাঁর আর দলের মধ্যে কোনও স্থান নেই বলেও আক্ষেপের সুরে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, তিনি নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়বেন। তাঁর সহকর্মী সমর্থকরাও সভায় জয়পুর বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে বিপুল ভোটে জেতানোর প্রতিজ্ঞা করেন। স্বাভাবিকভাবে তখন থেকেই শাসক শিবির এই কেন্দ্রে কোণঠাসা হয়ে পড়ে।

কিন্তু ঘটনায় নাটকীয় মোড় এল তখন, যেদিন হাইকোর্টে বাতিল হয়ে গেল পুরুলিয়ার জয়পুর আসনের জন্য তৃনমূল প্রার্থীর মনোনয়ন। কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দিয়েছেন গত শুক্রবার। এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা করেছিলেন উজ্জ্বল কুমার। কিন্তু গত বুধবার জমা দেওয়া মনোনয়ন পত্রে সামান্য ত্রুটি থাকার জন্য পুরুলিয়ার ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করে দেয় নির্বাচন কমিশন। পুরুলিয়ার বাকি আসনগুলির তালিকা নির্বাচন কমিশন তাদের ওয়েবসাইটে আপলোড করলেও জয়পুর বিধানসভার তালিকা অনেক রাতে আপলোড করা হয়। সেখানেই নির্বাচন কমিশন উজ্জ্বল কুমারের মনোনয়নপত্র ‘রিজেক্টেড’ বলে দেখায়। কারণ হিসেবে জানানো হয়, ওই তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়নের হলফনামায় তারিখ ভুল ছিল। জয়পুর বিধানসভা তৃণমূল নেতৃত্ব-সহ জেলা নেতৃত্ব কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তারপর সিঙ্গল বেঞ্চে স্বস্তি মিললেও, ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে তাদের নিরাশ হতে হয়।

সেই হিসাবে জোড়া ফুল চিহ্নে এই কেন্দ্রে লড়াই করার আর উপায় নেই শাসকদলের, কারণ মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখটিও পেরিয়ে গিয়েছে। আর ৯ই মার্চ মনোনয়ন জমা করার শেষ তারিখ পেরিয়ে যাওয়ার ফলে এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী দেওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই আর ছিল না। সেক্ষেত্রে ২৯১ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও, ভোটে লড়তে চলেছেন ২৯০ জন প্রার্থী। প্রশ্ন উঠছিল, এইবারে শাসক শিবির কী করবে? তারা কী লড়াইয়ের জন্য শেষ চেষ্টা করতে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কড়া নাড়বে? না কি দলত্যাগী নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন জানাবে? না লড়াইয়ের আগেই পরাজয় মেনে নেবে? তবে এই উত্তরের জন্য খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হল না। বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে বিরোধীদের এক ইঞ্চি জমি ছাড়তেও নারাজ শাসক শিবির শেষ মেষ দলত্যাগী নির্দল প্রার্থী দিব্যজ্যোতির হয়েই ভোটে লড়তে চলেছে তৃণমূল।

RELATED ARTICLES

Most Popular