Homeরাজ্যউত্তরবঙ্গমুখ্যমন্ত্রীর আবেদন সত্ত্বেও থামছেনা অশান্তি; বিজেপি কার্যালয় ভাঙচুর ও কর্মী সমর্থকদের ওপর...

মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন সত্ত্বেও থামছেনা অশান্তি; বিজেপি কার্যালয় ভাঙচুর ও কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ালো দেওচড়াইয়ে

অশ্লেষা চৌধুরী:

বৃহস্পতিবার দুপুরে এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডের ১২নম্বর বেড থেকে এক ভিডিও বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন আগের দিন রাতে নন্দীগ্রামে তিনি আহত হয়েছিলেন দুর্ঘটনায়। অর্থাৎ কেউ তাঁকে ধাক্কা দেয়নি। পুলিশের রিপোর্টেও তেমনটাই বলা হয়েছে। ওই ভিডিও বার্তায় নিজের দলীয় কর্মীদের কাছে তাঁর আবেদন ছিল সংযত থাকার। কিন্তু তা সত্ত্বেও থামল না অশান্তি। বিজেপি কার্যালয় ভাঙচুর এবং বিজেপি কার্যালয়ে বসে থাকা কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহারের দেওচড়াই গ্রাম পঞ্চায়েতের বাজার এলাকা। ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ বিজেপির।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে বিজেপি কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দেওচড়াই গ্রাম পঞ্চায়েতের বাজার এলাকা। বিজেপির অভিযোগ, দেওচড়াই বাজারে বিজেপি কার্যালয়ে বসেছিলেন তাদের দলীয় কর্মী সমর্থকরা। সেই সময় নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আক্রমনের প্রতিবাদে ধিক্কার মিছিল চলছিল। সেই ধিক্কার মিছিল থেকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা লাঠি, বাঁশ নিয়ে অতর্কিতে বিজেপি কার্যালয়ে বসে থাকা বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালায়।

বিজেপির আরও অভিযোগ, ভাঙচুর করা হয় বিজেপি কার্যালয়। ছিঁড়ে ফেলা হয় বিজেপির দলীয় পতাকা, ফ্লেক্স, ব্যানার। শুধু এই নয়, পার্টি অফিসের সামনে রাখা বেশ কিছু সাইকেল ও মোটর সাইকেল ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় আহত হয় বিজেপির কয়েক জন সমর্থক।

বিজেপি কার্যালয় ভাঙচুর এবং বিজেপি কার্যালয়ে বসে থাকা কর্মী সমর্থকদের উপর হামলার প্রতিবাদে দেওচড়াই – দিনহাটা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি সমর্থকেরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তুফানগঞ্জ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশ প্রশাসন দোষীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে প্রায় ১ ঘন্টা পর অবরোধ তুলে নেয় বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে। তবে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশবাহিনী।

নন্দীগ্রামে ভোটের প্রচারে গিয়ে গুরুতর আহত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আপাতত তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার গোড়ালিতে চির ধরেছে, অস্থায়ী প্লাস্টার বাধা রয়েছে। আর ওনার এই আঘাত পাওয়ার পর থেকেই জায়গায় জায়গায় তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন, অশান্তির খবর আসতে থাকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। সকলেই বিজেপি এই ঘটনার জন্য দায়ী বলে অভিযোগ করে প্রতিবাদে সামিল হন। খবর পৌঁছায় অসুস্থ তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রীর কানেও। হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই এক ভিডিও বার্তায় মমতা কর্মী সমর্থকদের জন্য বার্তা দেন। তিনি বলেন, ‘শরীর খুব খারাপ। ডাক্তারদের পরামর্শে রয়েছি। আমার বুকে ও মাথায় কাল খুব ব্যথা করে। হাতে, কাঁধে,পায়ে ও মুখে লেগেছে। গাড়ির দরজা খোলা ছিল। সেই সময় চাপ আসে, গাড়িটা পায়ে চেপে যায়। সেই অবস্থায় আমরা কলকাতায় রওনা হই। পায়ে ব্যপক চোট লেগেছে। ডাক্তারা পুরোটা বলতে পারবেন।’ এরপরই মমতা বলেছেন, ‘আমার কর্মী ভাইয়ের কাছে অনুরোধ, এমন কিছু করবেন না যাতে সাধারণ মানুষের কোনও অসুবিধে হয়।’ কিন্তু দলনেত্রীর অনুরোধ সত্ত্বেও সেই অশান্তির আগুন নিভল না।

RELATED ARTICLES

Most Popular