ওয়েব ডেস্ক : দিন দুয়েক আগেই রিয়া চক্রবর্তী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরূপের অভিযোগ করেছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুতের বাবা কেকে সিং রাজপুত। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তের দায়ভার চলে গিয়েছে ইডির হাতে। ফলে বিহার পুলিশের পাশাপাশি তদন্ত শুরু করেছে ইডি। ফলে আপাতত এই মৃত্যুর তদন্তে বড়সড় বিপাকে সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী। দিন দুয়েক আগেই সুশান্তের বাবা পাটনা থানায় রিয়ার বিরুদ্ধে সুশান্তকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র,তাঁর টাকা আত্মসাৎ করার মতো অভিযোগ দায়ের করেছেন। এবার পাটনা পুলিশের এফআইআরের কপির ভিত্তিতে শুক্রবার রিয়া ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরূপের মামলাও দায়ের করেছে ইডি।
সুশান্তের মৃত্যুর পর পর তাঁর মৃত্যুকে আত্মহত্যা মনে করা হল যতদিন যাচ্ছে বোঝা যাচ্ছে এই ঘটনা আত্মহত্যা নয় খুন। তারপর থেকে লাগাতার সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুরাগীরা সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। এদিকে সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকেই তাঁর বান্ধবীর প্রকাশ্যে না আসার বিষয়টিতে সন্দেহ হয় ভক্তদের। তাঁর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় রিয়াকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ শুরু হয় সুশান্ত ভক্তদের। তার উপর সুশান্তের পরিবারের অভিযোগ সেই ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলেছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রিয়ার বিরুদ্ধে পাটনা থানায় একটি ৫ পাতার অভিযোগ দায়ের করেন কেকে সিং। খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই একেবারে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না রিয়া চক্রবর্তীকে। অবশেষে শুক্রবার একটি ভিডিয়ো বার্তা জারি করে মুখ খুললেন রিয়া চক্রবর্তী।
মাত্র ২০ সেকেন্ডের ভিডিওতে তিনি বললেন, “সত্যমেব জয়তে। সত্যের জয় হবেই” এ কথাই বলতে শোনা গেল সুশান্তের বান্ধবীকে। রিয়া বলেন, “আমার ভগবান এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আমি নিশ্চিত আমি সুবিচার পাব। যদিও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে আমার সম্পর্কে বহু ভয়ঙ্কর কথা বলা হচ্ছে আমি কোনওরকম মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকছি আমার আইনজীবীদের পরামর্শে। যেহেতু মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। সত্যমেব জয়তে। সত্যের হয় হবেই।”এদিকে সুশান্তের পরিবার নাকি তাদের ‘ক্ষমতা’র অপব্যবহার করে রিয়া চক্রবর্তীকে ফাঁসিয়ে দেওয়ায় চেষ্টা করছে। সেই কারণেই পাটনা থানায় রিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছেন সুশান্তের বাবা কেকে সিং, সুপ্রিম কোর্টের কাছে এমনই আর্জি জানিয়ে গত বুধবার পিটিশন দায়ে করেছেন রিয়া চক্রবর্তী। তবে রিয়া চক্রবর্তীর তরফে এই পিটিশনের জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদন জানানো হলেও এখনও পর্যন্ত শীর্ষ আলাদতের তরফে এই আবেদনের কোনওরকম শুনানি প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।
তবে এই পিটিশনে রিয়া স্বীকার করে নিয়েছেন যে সুশান্ত ও রিয়া লিভ-ইন রিলেশনশিপে ছিলেন৷ পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন সুশান্তের মৃত্যুর পর চারিদিকের নানা কুরুচিকর মন্তব্যে ব্যক্তিগত পর্যায়ে তিনি ভীষণরকমভাবে ভেঙে পড়েছেন। তার ওপর এই মামলা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে চলা কাটাছেঁড়া তাঁর যন্ত্রণা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই সুশান্তের মৃত্যুর ঘটনায় রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সুশান্তের বাবা কে কে সিং রাজপুত পাটনার রাজেন্দ্রনগর থানায় রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১, ৩৪২, ৩৮০, ৪০৬, ৪২০ ও ৩০৬ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন। অভিযোগের কয়েকঘন্টার মধ্যেই তদন্তে নামেন বিহার পুলিশ৷ সে কারণেই বুধবার বিহার পুলিশের তরফে একটি দল মুম্বই পৌঁছান। জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ে রিয়ার যে ঠিকানা তাঁদের দেওয়া হয়েছিল বুধবার সকালেই সেখানে পৌঁছয় বিহার পুলিশের একটি দল। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, রিয়া বা তাঁর পরিবারের কেউই সেখানে থাকেন না। তবে রিয়া মুম্বইয়ের ঠিক কোথায় রয়েছেন তাঁর খোঁজ করছেন পুলিশ৷ এর পরপরই শুক্রবার পাটনা পুলিশের অভিযোগের ভিত্তিতে এই ঘটনাটি ইডি-র হাতে চলে যায়। ফলে মনে করা হচ্ছে পাটনা পুলিশ ও ইডির মিলিত প্রচেষ্টায় খুব শীঘ্রই কাঠগড়ায় উঠবেন রিয়া চক্রবর্তী।