Homeএখন খবরকরোনা' র পর গোলাপ ভাইরাস! প্রেম দিবসের আগে গোলাপ কাঁটায় ক্ষত...

করোনা’ র পর গোলাপ ভাইরাস! প্রেম দিবসের আগে গোলাপ কাঁটায় ক্ষত বিক্ষত দুই মেদিনীপুরের গোলাপ চাষিরা

ফুলের চেয়ে পাতাই বেশি, পশ্চিম মেদিনীপুরের জকপুরের একটি গোলাপ বাগান  

নিজস্ব সংবাদদাতা : রাত পোহালেই প্রেমের দিন বা প্রেম দিবস। ইংরেজিতে ভ্যালেন্টাইন ডে। দুজন দুজনকে গোলাপ দেওয়ার দিন। স্বভাবতই এদিন গোলাপের উপচে পড়া চাহিদা। প্রেমের গোলাপের সেই চাহিদা মেটাতে হিমসিম খান চাষিরা। অবশ্য তার জন্য পকেট ভর্তি টাকাও আসে। কিন্তু এবার বিধি বাম। বিশ্বজোড়া করোনা ভাইরাসের মতই ভাইরাস লেগেছে সেই গোলাপেও । আর সে কারনেই  প্রেম দিবসে  মাথায় হাত গোলাপ চাষিদের।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
জানা গিয়েছে। জানুয়ারি মাসে অকাল বৃষ্টির ফলে এবার গোলাপ চাষ সংক্রমণের শিকার। বাগানের পর বাগান শেষ। ফুল হচ্ছেনা এই মরশুমে। প্রতিদিন কীটনাশক স্প্রে করেও রক্ষা করা যাচ্ছেনা গোলাপ ফুল ও গাছ। সামান্য কোথাও কোথাও সামান্য সংখ্যক ফুল হলেও ফুলের আকার ঠিক নেই। ফুলের উপর দাগ। এক-দুদিনের মধ্যে গাছেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গোপাল। ব্যাপক ক্ষতির মুখে গোলাপ চাষিরা।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ফি বছরই এই সময় ব্যাপক চাহিদা থাকে গোলাপের। পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর-২ ব্লক, ডেবরা, দাসপুর এবং পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া, কোলাঘাট সহ বেশকিছু জায়গা থেকে নানা প্রজাতির গোলাপ ফুল রপ্তানি করা হয় দেশ বিদেশে। এবারও ফুলের চাহিদা রয়েছে। গোলাপের দামও রয়েছে ভাল। কিন্তু সংক্রমণের জন্য ফুল হচ্ছেনা একেবারেই। গোলাপ চাষিদের কথায় প্রতিদিন কীট নাশক দিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না। ফলে চাহিদা ও দাম থাকলেও কোন লাভ নেই ফুল না হলে।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
পশ্চিম মেদিনীপুরের জকপুরের গোলাপ চাষি দিলীপ হাজরা বলেন, বিগত ৩০ বছর ধরে গোলাপ চাষ করছি। এবার যে কি ভাইরাসের আক্রমন কিছুই বুঝতে পারছিনা। দিলীপ বলেন, এবারও বিঘা দেড়েক জমিতে প্রায় ৭ হাজার লাল ‘মিনিপল প্রজাতি’র গোলাপ লাগিয়েছি। অন্যান্য বছর এই জমিতে যেখানে চার-সাড়ে চার লাখ টাকার ফুল বিক্রি করি এবার সেখানে দেড়-দু লাখ টাকার ফুল বিক্রি করতে পারলে অনেক। তিনি বলেন, অন্যান্য বছর প্রেম দিবসের আগে ১২ই ফেব্রুয়ারি এই বাগান থেকে যেখানে ৭ থেকে ১০ হাজার ফুল তুলে বিক্রি করি এবার সেখানে ৭০০ ফুলও হয়নি। ফুলের দাম থাকলে কী হবে? ফুলই তো হচ্ছে না। ফলে এবার ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে’।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এমনটা জানালেন রাজ্যের অন্যতম গোলাপ চারা প্রস্তুত কারক জকপুরের প্রণবীর মাইতিও । তিনি বলেন, ‘শুধু জকপুর বা পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, কোলাঘাট-পাঁশপুড়া সহ যেখানে যেখানে গোলাপ ফুলের চাষ হয় সর্বত্র এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। শুধু ফুল নয়। গোলাপ চারাতেও সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, অজানা ফাঙ্গাস। কোন কীটনাশকে কাজ হচ্ছে না। এমন সংক্রমণ এর আগে কোনদিন দেখিনি’। একই কথা দাসপুরের গোলাপ চাষি মনোজ সামন্তর।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
স্বভাবতই প্রেম দিবসে আগে বড়সড়  ক্ষতির মুখে গোলাপ চাষিরা। জানা গিয়েছে দুই মেদিনীপুর জেলা থেকে কয়েক কোটি টাকার গোলাপ ফুল ও চারা বিভিন্ন রাজ্য এমনকি দেশের বাইরে রপ্তানি হয়। উদ্যান পালন বিভাগের আধিকারিক কুশধ্বজ বাগ বলেন, ‘দুই মেদিনীপুর জেলাতে প্রায় ১০০০ হেক্টর জমিতে গোলাপ চাষ হয়। এই সংক্রমনের কথা আমারা শুনেছি চাষিদের কাছ থেকে। আমরা খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি’।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
গোলাপ চাষিদের কথায় প্রেম দিবসের আগে এই সময় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা প্রতি ১০০ পিস গোলাপের পাইকারি দামে বিক্রি হত। এবারও ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা ১০০ পিস গোলাপের দাম রয়েছে কিন্তু ফুল নেই। এবার প্রেম দিবসের আগে বাজারে খুচরো প্রতি পিস গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা দরে। ১৪ই ফেব্রুয়ারি আরও দাম বাড়বে বলেই আশঙ্কা।
  যদিও সেই দাম বাড়ায় পরোয়া নেই প্রেমিক প্রেমিকাদের। বছরে একটাই দিন! মেরেছ কলসির কানা, তা বলে কি প্রেম,  থুড়ি গোলাপ দেবনা? 

RELATED ARTICLES

Most Popular