Homeএখন খবর'ডাইনি' সন্দেহে গৃহবধূকে গ্রামছাড়া প্রতিবেশীদের, উদ্ধার করতে গেলে গ্রামবাসীদের সাথে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ,...

‘ডাইনি’ সন্দেহে গৃহবধূকে গ্রামছাড়া প্রতিবেশীদের, উদ্ধার করতে গেলে গ্রামবাসীদের সাথে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ, রণক্ষেত্র আউশগ্রাম

ওয়েব ডেস্ক : বিজ্ঞানের যুগে আজও কুসংস্কারাচ্ছন্ন এ রাজ্যের একাধিক গ্রামাঞ্চল। রবিবার সেই কুসংস্কারের সাক্ষী থাকলো পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম। গ্রামের ঠাকুরতলায় ভর পড়েছেন এক অসুস্থ গৃহবধূ। সেসময় গ্রামেরই আর এক গৃহবধূর নাম নিয়ে তাকে ডাইনি বলায় গ্রামবাসীরা তা মেনে নেন। এরপরই ডাইনি অপবাদে তাকে গ্রামছাড়া করার দাবিতে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের দিগনগর কেয়াতলায়। খবর পেয়ে ওই ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে ওই মহিলাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলে পুলিশকে ঘিরে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

জানা গিয়েছে, কিছুদিন ধরে বুধিন বাস্কে নামে গ্রামেরই এক অসুস্থ গৃহবধূ ঠাকুরতলায় ধরনা দিয়ে পড়েছিলেন। গত মঙ্গলবার থেকে তিনি অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করেন। এরপর গ্রামেরই এক মহিলার নাম নিয়ে তাকে ‘ডাইনি’ বলেন। এমনকি বলেন ওই মহিলাকে গ্রামছাড়া না করলে গ্রামবাসীদের চরম ক্ষতি হবে। ওই কথা শুনেই ভয় পেয়ে যায় আদিবাসী গ্রামবাসীরা৷ এরপর গ্রামবাসীদের একাংশ একজোট হয়ে ওই মহিলাকে গ্রাম থেকে তাড়াতে উদ্যত হন। গ্রামবাসীরা ওই গৃহবধূর বাপের বাড়ি ভেদিয়ায় ফোন করে মেয়েকে নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে গেলেও সেখান থেকে কেউ গৃহবধূকে নিতে না যাওয়ায় ক্ষেপে ওঠে গ্রামবাসীরা। তবে শুধু যে গ্রামবাসীরা ডাইনি অপবাদ দিয়েছে তা কিন্তু নয়। গ্রামবাসীদের অপবাদ মেনেও নিয়েছেন গৃহবধূর স্বামী। ঘটনায় ‘ডাইনি’ অপবাদ পাওয়া গৃহবধূর স্বামী জানান, “বাজারে গিয়েছিলাম। ঘরে ফিরে দেখি স্ত্রীকে সবাই ডাইনি বলছে। ওকে গ্রাম থেকে চলে যেতে হবে। বাধ্য হয়ে আমি গ্রামের লোকজনের কথা মেনে নিই।”

ঘটনার পর পরই খবর পেয়ে গৃহবধূকে উদ্ধার করতে ছুটে আসে পুলিশ। এদিকে গ্রামে পুলিশের গাড়ি ঢুকছে, খবর পাওয়া মাত্রই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে গ্রামবাসীরা। পুলিশের গাড়ি আটকে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পুলিশকে ফিরে যেতে বলেন গ্রামবাসীরা। তাদের দাবি, ওই গৃহবধূকে কোনোভাবেই গ্রামে রাখা যাবে না। এতে গ্রামের অমঙ্গল হবে। কিন্তু পুলিশ কর্মীরা তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও উল্টে পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যায়। গ্রামবাসীরা পুলিশকে লক্ষ করে ইট ও গুলতি ছুড়তে শুরু করেন। এদিকে গ্রামবাসীদের ইট ও গুলতির আঘাতে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী জখম হন। এদিকে পরিস্থিতি ক্রমশ রণক্ষেত্রের রূপ নিতে দেখে শেষমেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শূন্যে দু রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। আর তাতে গ্রামবাসীরা সরে যেতে থাকে। এরপর ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।

RELATED ARTICLES

Most Popular